Svoboda | Graniru | BBC Russia | Golosameriki | Facebook
Transfiguration pending
বিষয়বস্তুতে চলুন

ক্ষেত্র গুপ্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্ষেত্র গুপ্ত
জন্ম১৭ জানুয়ারি, ১৯৩০
মৃত্যু২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০ (বয়স ৮০)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅধ্যাপক, সমালোচক ও প্রাবন্ধিক
দাম্পত্য সঙ্গীজ্যোৎস্না গুপ্ত
সন্তানপ্রচেত গুপ্ত, পুষণ গুপ্ত
পিতা-মাতামৃন্ময় গুপ্ত (পিতা)
সরযূবালা দেবী(মাতা)
পুরস্কারবিদ্যাসাগর পুরস্কার
নজরুল স্মারক পুরস্কার
মধুসূদন পুরস্কার
সুকুমার সেন স্বর্ণপদক

ক্ষেত্র গুপ্ত(ইংরেজি: Kshetra Gupta)(জন্ম :- ১৭ জানুয়ারি, ১৯৩০ — মৃত্যু :- ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০) একজন বাঙালি অধ্যাপক, সমালোচক ও প্রাবন্ধিক।[১][২]

জন্ম ও শিক্ষা জীবন

[সম্পাদনা]

অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্তর জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের বরিশালের পিরোজপুরে। পিতা মৃন্ময় গুপ্ত ও মাতা সরযূবালা দেবী। বাল্যকাল থেকেই ক্ষেত্র গুপ্ত পড়াশোনায় মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পিরোজপুর সরকারি বিদ্যালয় থেকে ডিভিশন্যাল বৃত্তি পেয়ে ম্যাট্রিক পাশ করেন। দেশভাগের পর তার পিতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে এসে বারাসতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। প্রায় সব ক-টি পত্রেই সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ৬ টি স্বর্ণ পদক ও ১ টি রৌপ্যপদক লাভ করেন। 'মধুসূদনের কবি-আত্মা ঔ কাব্যশিল্প' শীর্ষক প্রবন্ধ রচনা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি পান। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস: শিল্পরীতি' গ্রন্থে র জন্য রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট উপাধি পান।[৩]

কর্মজীবন ও সাহিত্যকর্ম

[সম্পাদনা]

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিটি কলেজে যোগ দেন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে লেকচারার পরে রিডার এবং বিদ্যাসাগর অধ্যাপক হিসাবে বাংলা বিভাগের প্রধান হন। এছাড়াও তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেছেন। কিছুদিন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেছেন এবং এভাবে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অফ ফোকলোর' এর সভাপতি ছিলেন। অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্ত মূলতঃ, ছিলেন অন্যতম সাহিত্য সমালোচক। সম্পূর্ণ নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে বঙ্কিমচন্দ্র, মধুসূদন, তারাশঙ্কর, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র প্রমুখ বিখ্যাত সাহিত্যিকের রচনাসমূহের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণে যে বিশ্লেষণ করেছেন তাতে বাংলা সাহিত্য সমালোচনায় এক নতুন ধারা প্রবর্তিত হয়ছে। তার রচিত বহু গ্রন্থ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের সহায়ক গ্রন্থ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার এরূপ প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা শতাধিক। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হলো:

  • 'সমালোচনা' - (৬ খণ্ড)
  • 'বাংলা উপন্যাসের ইতিহাস' - (১৯৬৮ - ২০০৬)
  • 'প্রাচীন কাব্য-সৌন্দর্য জিজ্ঞাসা ও নবমূল্যায়ন ' - (১৯৫৮)
  • 'মধুসূদনের কবি-আত্মা ও কাব্যশিল্প' - (১৯৮৩)
  • 'বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস: শিল্পরীতি' - (১৯৭৪)
  • 'রবীন্দ্র-গল্প : অন্য রবীন্দ্রনাথ' - (১৯৮৩)
  • 'সংযোগের সন্ধান লোকসংস্কৃতি' - (১৯৮০)
  • 'বাংলাদেশ : সংস্কৃতি ও সাহিত্য' - (১৪০৮ ব)
  • 'কবি মুকুন্দরাম'
  • 'বাংলা সাহিত্যের সমগ্র ইতিহাস' তাঁর লেখা অন্যতম প্রধান গ্রন্থ।এ গ্রন্থে তিনি সংক্ষিপ্ত পরিসরে বাংলা সাহিত্যের সমগ্র ইতিহাসকে যেমন করে ফুটে তুলেছেন তাতে তাঁর অনন্য সাধারণ প্রতিভার পরিচয় মেলে।সাহিত্যের ইতিহাস পড়ার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থটি শিক্ষার্থীদের বিশেষ ভাবে সহায়তা করে থাকে।

সম্মাননা

[সম্পাদনা]

সাহিত্যকীর্তির জন্য তার প্রাপ্ত বহু পুরস্কারের উল্লেখযোগ্য এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে 'সুকুমার সেন স্বর্ণপদক', পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের 'বিদ্যাসাগর পুরস্কার', বাংলাদেশের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের 'নজরুল স্মারক পুরস্কার', রেনেসাঁস একাডেমির 'মধুসূদন পুরস্কার' এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আশুতোষ ভট্টাচার্য লোকসাহিত্য পুরস্কার' প্রভৃতি।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

অধ্যাপক ক্ষেত্র গুপ্ত ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে সেপ্টেম্বর ৮০ বৎসর বয়সে কলকাতায় প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি-২০১৯ পৃষ্ঠা ১০২,১০৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. শিশিরকুমার দাশ সংকলিত ও সম্পাদিত, সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৯, পৃষ্ঠা ২৩ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-০০৭-৯ {{আইএসবিএন}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: চেকসাম
  3. "ক্ষেত্র গুপ্ত - Barisalpedia"www.barisalpedia.net.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-১১