Svoboda | Graniru | BBC Russia | Golosameriki | Facebook
Transfiguration pending
বিষয়বস্তুতে চলুন

পক্ষাঘাত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শিশুটি পক্ষাঘাতে ভুগছিলো

পক্ষাঘাত (ইংরেজি: Paralysis) একপ্রকার দৈহিক বিকার যাতে মাংশপেশী স্বাভাবিক কাজ করার বদলে দুর্বল বা শিথিল (অথবা প্রকারভেদে আড়ষ্ট) হয়ে থাকে। এতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পঙ্গুত্ব হতে পারে। পক্ষাঘাত একটি দুটি পেশীতে হতে পারে, এক বা একাধিক অঙ্গে হরে পারে বা পুরো শরীরে হতে পারে। অনেক সময়ই পক্ষাঘাতের সঙ্গে অবশতা অর্থাৎ স্পর্শ অনুভূতির অভাব হতে পারে, কিন্তু সবসময় নয়। পক্ষাঘাত স্বল্পস্থায়ী হতে পারে অথবা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। পক্ষাঘাত অন্য রোগের উপসর্গ অথবা একাই একটি ভয়াবহ রোগ হিসাবে হতে পারে, আবার পক্ষাঘাত খুব মৃদু এবং স্বল্পমেয়াদী হতে পারে যা আমরা প্রায় টেরও না পেতে পারি। দেখা গেছে গড়ে পঞ্চাশ জনের মধ্যে একজনের অল্পবিস্তর পক্ষাঘাত আছে। []

ব্যুৎপত্তি

[সম্পাদনা]

বাংলা পক্ষাঘাত শব্দটি এসেছে "পক্ষ + আঘাত" থেকে। স্ট্রোক অথবা শিরদাড়ার একদিকে আঘাত লাগলে অনেক সময় শরীরের বিপরীত অর্ধেক অবশ এবং পঙ্গু হয়ে যায়। শরীরের এক অর্ধ অর্থাৎ এক পক্ষ আঘাতগ্রস্ত হবার থেকেই সম্ভবতঃ এই শব্দটির উৎপত্তি।

পক্ষাঘাতের কারণ পেশী জনিত বা স্নায়ুজনিত হতে পারে।

পক্ষাঘাত সাধারণতঃ স্নায়ুতে আঘাত দ্বারা শুরু হয়ে থাকে, বিশেষ করে শিরদাঁড়া (অর্থাৎ মেরুদণ্ডে)চোট লেগে। অন্যান্য কিছু কারণ হল স্ট্রোক, অন্যান্য আঘাত যার সঙ্গে স্নায়বিক আঘাত জড়িত থাকতে পারে, পোলিও, পার্কিন্সন্স ডিজিজ, এ এল এস, বোটুলিজম, মালটিপ্ল স্ক্লেরোসিস, গুলে বারে সিনড্রোম, জন্মগত সিফিলিস, স্পাইনা বাইফিডা, সেরিব্রাল প্যালসি ইত্যাদি।

অনেক স্পাইনা বাইফিডা জনিত জন্মগত পক্ষাঘাত জন্মের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শল্য চিকিৎশা দ্বারা সম্পূর্ণ নিরাময় করা স্মভব হতে পারে।

অনেক সময় আসলে পেশীর দৌর্বল্য না থাকলেও পক্ষাঘাতের মত উপ্সর্গ দেখা দিতে পারে। একে ছদ্ম পক্ষাঘাত বলে।

প্রকারান্তর

[সম্পাদনা]

কোন পেশী বা শরীরের কোন অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছে, পেশী কতটা দূর্বল হয়েছে এবং কতটা বা নানান অংশ সময়ের সঙ্গে কী ক্রমান্বয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছে বা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে পক্ষাঘাতের নানা প্রকারান্তর দেখা যেতে পারে।

প্যারাপ্লেজিয়া, প্যারাপেরেসিস, হেমিপ্লেজিয়া, হেমিপ্যারেসিস, ক্যোয়াড্রিপ্লেজিয়া, ক্যোয়াড্রিপেরেসিস এই শব্দগুলি দ্বারা নানা ধরনের পক্ষাঘাত বোঝানো হয়। হেমি অর্থে শরীরের এক পাশ (যার থেকে পক্ষাঘাত শব্দের উৎপত্তি), প্যারা বলতে এক্ষেত্রে শরীরের নীম্নার্ধ, এবং ক্যোয়াড্রি বলতে এক্ষেত্রে চার অঙ্গ বোঝায়। এবং প্লেজিয়া বলতে সম্পূর্ণ পঙ্গুতা এবং প্যারেসিস বলতে আংশিক দৌর্বল্য বোঝায়।

নেতিয়ে পড়া অর্থাৎ পেশী শৈথিল্য হলে তাকে ফ্লাসিড প্যারালিসিস (Flaccid paralysis) এবং আড়ষ্পেটতা বা খিঁচ ধরা অর্থাৎ পেশী কাঠিন্য হলে তাকে স্পাস্টিক প্যারালিসিস (Spastic paralysis) বলা হয়। তবে সাধারণ ভাবে দৌর্বল্য এবং শৈথল্য ধরনের অর্থেই পক্ষাঘাত বা প্যারালিসিস শব্দটি বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে।

ঊর্ধবাহী পক্ষাঘাত হয় যখন পায়ের দিক থেকে উপরের দিকে পক্ষাঘাত ছড়ায়, যা হতে পারে গুলে বারে সিনড্রোম এবং টিক নামক কীট দংশন[] জনিত পক্ষাঘাতে।

নিম্নবাহী পক্ষাঘাত এর বিপরীত এবং বোটুলিজম এর ক্ষেত্রে হতে পারে।

ইংরাজী প্যালসি (Palsy) শব্দটি প্যারালিসিস বা পক্ষাঘাতের প্রায় সমার্থক কিন্তু কয়েকটি বিশেষ পক্ষাঘাতের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। যেমন বেলস প্যালসি ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Paralysis Facts & Figures - Spinal Cord Injury - Paralysis Research Center"। Christopherreeve.org। ২০১৬-০৩-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-১৯ 
  2. মেডলাইন প্লাস এন্সাইক্লোপিডিয়ার টিক প্যারালিসিস পাতা