Svoboda | Graniru | BBC Russia | Golosameriki | Facebook

অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

"সত্যি বলতে, ট্রেলার প্রকাশের পর আমার চোখে পানি চলে এসেছে"


অভিনেতা আরিফিন শুভ
অভিনেতা আরিফিন শুভ

বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও প্রভাবশালী কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৫তম আসরে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর “মুজিব : দ্য মেকিং অফ আ নেশন” সিনেমাটির ট্রেলার প্রদর্শন হয়। এই ট্রেলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উদ্দেশে ১৭ মে রওনা হন নাম ভূমিকায় অভিনয় করা আরিফিন শুভ। ইতোমধ্যে প্রকাশিত সিনেমার ট্রেলার নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ট্রেলার প্রকাশ, কান উৎসবের অভিজ্ঞতা ও “মুজিব : দ্য মেকিং অফ আ নেশন” চলচ্চিত্রটি নিয়ে সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বললেন আরিফিন শুভ। ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মাহতাব হোসেন।

ভয়েস অফ আমেরিকা: কেমন আছেন?

আরিফিন শুভ : বেশ ভালো আছি। অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কাল যখন আপনি ফোন দিয়েছিলেন, তখন ভারতীয় একটা সিনেমার স্ক্রিনিং শেষ করে ওদের পার্টিতে যাচ্ছিলাম। পথে ছিলাম।

ভয়েস অফ আমেরিকা: খুব ব্যস্ততায় সময় কাটছে, প্যারিসের সেই ব্যস্ত সময়ের গল্পই যদি বলেন...

আরিফিন শুভ : আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবিরহাট সম্পর্কে জানেন নিশ্চই। সেখানে সবাই আসে। কেউ গল্প করছে সৃজনশীল কাজ নিয়ে। কেউ আঁকা নিয়ে কথা বলছে, কেউ লেখা নিয়ে কথা বলছে। কেউ সংগীত নিয়ে কথা বলছে, কেউ সিনেমা বানাচ্ছে-সেসব নিয়ে কথা বলছে। আমার কাছে কান উৎসবটা না ঠিক তেমনই একটা উৎসব মনে হচ্ছে। এখানে সব সৃষ্টিশীল মানুষের মেলা। কেউ সিনেমার মেকিং নিয়ে কথা বলছে। কেউ চিত্রনাট্য নিয়ে কথা বলছে, কেউ গল্প নিয়ে কথা বলছে। আমার কাছে সেই একই আবহ মনে হচ্ছে। খুবই দারুণ সময় কাটছে বলতে পারেন।

ভয়েস অফ আমেরিকা: এতো কিছুর মধ্যে মনে রাখার মতো কিছু তো রয়েছেই?

আরিফিন শুভ : অবশ্যই। বলতে পারেন, কানে আসার ঘটনাই মনের রাখার মতো ঘটনা। কানে এসেছি একটা শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনার মধ্য দিয়ে—এটা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। আমি ১৫ তারিখ রাতে কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছি। ১৬ তারিখ দুপুর ২টায় পাসপোর্ট অ্যাম্বেসিতে দিয়েছি। ১৭ তারিখ ৫টায় ভিসাসহ পাসপোর্ট হাতে পেয়েছি। রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছি, কারণ ফ্লাইট ১০টা ৪০ মিনিটে। মানে আমরা ১৭ তারিখ দুপুর সাড়ে ৩টাতেও নিশ্চিত হতে পারছিলাম না, আসলেই কানে যেতে পারছি কি না।

ভয়েস অফ আমেরিকা: শেষ পর্যন্ত তো গেলেন এবং ট্রেলার প্রকাশ হলো...

আরিফিন শুভ : হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত ১৮ তারিখে পৌঁছলাম। ১৯ তারিখে ট্রেলার লঞ্চ হলো। ২০ তারিখে রেড কার্পেটে হাঁটলাম। ২১ তারিখ থেকে বিভিন্ন সিনেমার স্ক্রিনিং দেখছি। এইতো এভাবেই ব্যস্ত সময় কাটছে। বিভিন্ন দেশের আর্টিস্ট, ডিরেক্টরদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে কথা হচ্ছে। বলতে পারেন এখানে এসে সঞ্চয় করছি।

ভয়েস অফ আমেরিকা: ট্রেলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে কেমন প্রতিক্রিয়া পেলেন?

আরিফিন শুভ : সেটা একদম মনে রাখার মতো। সত্যি বলতে, আমার আজীবন মনে থাকবে। ট্রেলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অনেক বিদেশি ডিরেক্টর ও অতিথি উপস্থিত ছিলেন। জার্মানিসহ বেশ কয়েকজন ডিরেক্টর ট্রেলার প্রকাশ পরবর্তী পার্টিতে বললেন, “স্পিচ অফ দ্য ডে”। ট্রেলারে বঙ্গবন্ধুর যে বক্তব্য ছিল, সেটা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিদেশি ডিরেক্টররা এ কথা বললেন। তারা প্রশংসাও করলেন। আর আমাকে যে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছিল, সেখানে আমার মাথায় ছিল যে, আমাকে ভারত ও বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীকে শুধু ধন্যবাদ জানাতে হবে। কিন্তু উইদাউট স্ক্রিপ্ট আমি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে টানা বলে গেলাম। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সকলেই শুনলেন। বিদেশিরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এমন সব অজানা তথ্য পেয়ে বেশ অবাক হয়েছেন। তারা বঙ্গবন্ধুকে জানলেন। বিদেশে বঙ্গবন্ধুর কথা নতুনভাবে অনেকেই জানল, এটা আমার জন্য পরম পাওয়া।

কিন্তু উইদাউট স্ক্রিপ্ট আমি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে টানা বলে গেলাম। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সকলেই শুনলেন। বিদেশিরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এমন সব অজানা তথ্য পেয়ে বেশ অবাক হয়েছেন।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনি বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয় করলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দেশের মানুষ শুভকে বঙ্গবন্ধুর লুকে দেখল, এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

আরিফিন শুভ : দেখেন এই সিনেমাটার সঙ্গে দুই বছর আমি লেগে ছিলাম। এর মধ্যে কোভিড সিচুয়েশনসহ অনেক বাধা বিপত্তি শেষে সিনেমাটির কোনো একটি অংশ প্রকাশ হলো। এটা নিয়ে একটা তীব্র উত্তেজনা ছিল। স্বাভাবিকভাবেই একটা রোমাঞ্চবোধ তো কাজ করেছেই। সত্যি বলতে, ট্রেলার প্রকাশের পর আমার চোখে পানি চলে এসেছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর আমার সেটা ঘটল।

ভয়েস অফ আমেরিকা: ট্রেলার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে আপনার অভিমত?

আরিফিন শুভ : প্রথমেই বলে নেই, এটি কিন্তু অফিশিয়াল ট্রেলার নয়। এটা শুধুমাত্র কান চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য বানানো ট্রেলার। এখনো সিনেমার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। তার মানে রান্নাবান্না হচ্ছে এখনো। কী খাবারটা তৈরি হলো, তা কিন্তু সিনেমা না মুক্তি পাওয়া পর্যন্ত বোঝা যাবে না। সমালোচনার অনেকগুলো বিষয় আমিও শুনেছি, জেনেছি। তাই আমাকে বলতেই হচ্ছে, এই ট্রেলারটা মাত্র ১৩ দিনে বানানো হয়েছে। ভিএফএক্স-এর যে কাজগুলো দেখছেন, সেটা কিন্তু মাত্র ১০ দিনে করা। এখনো ভিএফএক্স-এর কাজ বাকি আছে। আরও অনেক কিছুই বাকি রয়েছে। আমি শুধু এতটুকু বলব, এটা অফিশিয়াল ট্রেলার নয়। অফিশিয়াল ট্রেলার আমরা কিছু দিনের মধ্যেই প্রকাশ করব।

ভয়েস অফ আমেরিকা: তার মানে কানে প্রকাশিত ট্রেলারে যে ত্রুটিগুলো দেখা গেছে, যেমন মাইক্রোফোনের তার নেই, ভয়েসে দুর্বলতা বা অন্য যে ত্রুটি চোখে পড়েছে, তা ঠিক হয়ে যাবে?

আরিফিন শুভ : অবশ্যই। আপনি চিন্তা করেন মাত্র ১৩ দিনে বানানো ট্রেলার এটি। যে সকল ত্রুটি চোখে পড়েছে, আপনি যেসব বললেন, এসব সিনেমায় অবশ্যই পরিবর্তিত অবস্থায় আসবে।

আপনি চিন্তা করেন মাত্র ১৩ দিনে বানানো ট্রেলার এটি। যে সকল ত্রুটি চোখে পড়েছে, আপনি যেসব বললেন, এসব সিনেমায় অবশ্যই পরিবর্তিত অবস্থায় আসবে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: অফিশিয়াল ট্রেলার কবে প্রকাশ হবে, আর চলচ্চিত্রটি কবে নাগাদ তাহলে দেশের মানুষ দেখতে পাবে?

আরিফিন শুভ : কথা তো রয়েছে, সেপ্টেম্বরে দেশের মানুষের জন্য মুক্তি দেওয়া হবে। এখন পুরো পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ সম্পন্ন হতে হবে সময় লাগবে দুই মাস। এরপর আসলে একদম নিশ্চিত মুক্তির তারিখ বলা সম্ভব হবে।

XS
SM
MD
LG