Svoboda | Graniru | BBC Russia | Golosameriki | Facebook

অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মাদ্রাসার বিকাশ ঘটাচ্ছে তালিবান, মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলগুলি চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে


ফাইল-গার্দেজে স্কুলের পথে আফগান মেয়েরা। ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২।
ফাইল-গার্দেজে স্কুলের পথে আফগান মেয়েরা। ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

আফগানিস্তানের শিক্ষা বিষয়ক এক কর্মকর্তা বলেছেন, তালিবান কর্তৃপক্ষ মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলগুলি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিতে পারে। বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে মাদ্রাসা নামে পরিচিত ধর্মীয় স্কুলগুলিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

২০২২ সালে তালিবান “ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক” উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি বন্ধ করে দিয়েছিল।

এই নিষেধাজ্ঞার সমর্থনে তালিবান কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছে, বয়স্ক নারী শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষাগত পরিবেশ তৈরি করতে তারা কাজ করছে।

২০০১-২০২১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর উপস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে সে দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার ভিওএ-কে বলেন, “অধিগ্রহণের সময় বিদ্যালয়গুলি যেভাবে ছিল সেভাবে আর খোলা নাও হতে পারে।”

তালিবান তাদের সদস্যদের ভিওএ-এর সঙ্গে আলাপে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ফলে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, “নীতি ও আদর্শগতভাবে স্কুল ও মাদ্রাসার মধ্যে কোনও ফারাক নেই।”

তিনি আরও বলেন, “উদ্দেশ্য যদি শিক্ষা হয়, তা স্কুলের মতো মাদ্রাসায়ও অর্জন করা যায়। তাই শুধুমাত্র স্কুলের উপর জোর দেওয়া উচিত নয়।”

তবে, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার কর্মীরা উদ্বিগ্ন যে, ধর্মীয় শিক্ষায় জোর দেওয়া মাদ্রাসাগুলি কখনও চিরাচরিত স্কুলগুলির জায়গা পুরোপুরি নিতে পারবে না।

চলতি মাসে জাতিসংঘের মহাপরিচালক অ্যান্তোনিয়ো গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলেছেন, “আমি উদ্বিগ্ন যে, আগামীতে কার্যকর কর্মশক্তিতে যোগ দিতে উচ্চ-স্তরের শিক্ষা ও পেশাদার প্রশিক্ষণের জন্য মেয়ে বা ছেলেদের পর্যাপ্তভাবে প্রস্তুত করে না এই প্রতিষ্ঠানগুলির শিক্ষার মান।”

মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই দেশজুড়ে নতুনভাবে নথিভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, আফগানিস্তানে ৭ হাজারের বেশি নিবন্ধিত মাদ্রাসা রয়েছে। মেয়েদের জন্য রয়েছে প্রায় ৩৮০টি মাদ্রাসা।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগান নারীশিক্ষা বিষয়ক সক্রিয় কর্মী পাশতানা দুরানি বলেন, তালিবান ইতোমধ্যেই স্কুলগুলিকে ধর্মীয় মাদ্রাসায় বদলে দিয়েছে।

মাদ্রাসাগুলিতে চরমপন্থী শিক্ষা দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দুরানি ভিওএ-কে বলেন, “তারা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা তৈরি করেছে।”

তালিবানের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে “লিঙ্গ-বৈষম্য” প্রয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে। এর লক্ষ্য হল, অধিকাংশ জনপরিসর থেকে নারীদের দূরে সরিয়ে রাখা।

গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণির পরীক্ষা পাশ করার পর ৩,৩০,০০০ জন আফগান মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়-শিক্ষা থেকে নিষিদ্ধ ৩৭ লক্ষ মেয়ের ভিড়ে তারা মিশে গেছে বলে জানিয়েছে সহায়তা সংস্থাগুলি।

ইউনিসেফের এক মুখপাত্র সালাম আল-জনাবি ভিওএ-কে বলেন, “এই অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের পরিণতি সুদূরপ্রসারী।”

XS
SM
MD
LG